পৃষ্ঠাসমূহ

২৩ ফেব, ২০১৪

প্রিয় অতন্দ্রিলা

অতন্দ্রিলা,
তুমি জানলেনা কোনদিন,
তোমার মুখে ঐ কথাটি শোনার
সেই কাঙ্খিত মুহূর্তটির জন্য
আমি অপেক্ষা করেছি কতকাল,
কত হাজার রাত নির্ঘুম থেকেছি,
শুধু সেই অনুভূতি—
তোমার মুখের হাসি,
অনুভবের প্রস্তুতি নিতে—
শিমুল তুলোর মত উড়ে
আলতো করে তোমার গাল ছুঁয়ে
কানে গোঁজা গোলাপের পাঁপড়ি হয়ে
আমি কোন অতীতে হারিয়ে গেছি তোমাতে—
অতন্দ্রিলা,
জানোনি তুমি, জানবে—
হঠাৎ আমিহীন কোন এক নক্ষত্র-ছাওয়া রাতে।।


২২ ফেব, ২০১৪

পাঠ-প্রতিক্রিয়াঃ লবণপানি

'নৌকা ছাড়ল আন্ধারিয়া গ্রাম থেকে। বিয়ে করে শ্যামাকে নিয়ে সুকুমার রওয়ানা দিয়েছে দুপুরের দিকে। শ্যামা দেখতে পেল আন্ধারিয়ার মাটি, গাছ, ঘরবাড়ি একটু একটু করে দূরে সরে যাচ্ছে। যেমন করে আন্ধারিয়ার বাঁশঝাড়ের ওই পারে অন্ধকার নামলে একটু একটু করে অদৃশ্য হয়ে যায় নদীর ওইপারের গ্রাম, আর কখনো কারো হাতে লণ্ঠন জ্বলে উঠলে নদীর পানিতে ভাসতে থাকা আলো জানান দেয় অদৃশ্য হলেই সব নাই হয়ে যায় না।'— পড়লাম এবারের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত মোশাহিদা সুলতানা ঋতু'র প্রথম উপন্যাস 'লবণপানি'।


১৭ ফেব, ২০১৪

জীবনানন্দের 'মনিয়া'

জীবনানন্দ দাশের কবিতায় 'মনিয়া' নামটি খেয়াল করেছিলাম আগেই, তবে এটা কোন ব্যক্তির নাম নাকি মনিয়া/মুনিয়া পাখির কথা বলা হচ্ছে সেটার ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলাম না। সেদিন পত্রিকা মারফত জানতে পারলাম মনিয়া ছিলেন জীবনানন্দের প্রথম প্রেমিকা। তাদের দেখা হয়েছিল বরিশালের একটি গির্জায়। যদিও সেই সূত্র এই তথ্যটিকে 'কথিত আছে' বলে প্রকাশ করছে, তবু সত্য-মিথ্যা যাই হোক এই ব্যাপারটা কিছুটা উল্টে-পাল্টে দেখা যেতে পারে।


আপাতত দুইটি কবিতার কথা মনে পড়ছে যেখানে 'মনিয়া' নামটির উল্লেখ আছে। একটিতে পাওয়া যাচ্ছে কোন এক রূপসীর কথা, আরেকটিতে দেখা যাচ্ছে ফেলে আসা এক প্রেয়সীকে ফিরে পাবার আকুতি।



১৪ ফেব, ২০১৪

ভালোবাসার সূর্যরেখা

প্রিয় মুখ নিয়ে যখন ভাবতে বসলাম, তখন একটা সিনেমার সিকুয়েন্সের মতো কিছু ঘটনা আমার চোখের সামনে ভেসে উঠতে লাগল। যেন একটা বায়োগ্রাফিক্যাল মুভি, যার পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে জীবনযুদ্ধ আর হারতে না শেখার শিক্ষা। তাই সেই মুভিটিরই একটা ছোট্ট স্ক্রিপ্টের মতো লেখার চেষ্টা করলাম।

পঞ্চাশ দশকের শেষের দিক। নড়াইলের নলদী জমিদার বাড়ি। একটা বড় খাটের একপাশে বালিশে হেলান দেয়া একজন যুবতী। পাশের টেবিলটায় বেশ কিছু ওষুধের শিশি। খাটের অন্যপাশে ঘুমাচ্ছে তার দুটি ছেলে। একজন কিছুটা বড়, বয়স দুই-তিন বছর হবে, অন্যজন আরও ছোট, দুধের শিশু। সে ঘাড় ঘুরিয়ে তার ছেলেদের দিকে তাকায়, তার চোখেমুখে ফুটে ওঠে দুশ্চিন্তার ছাপ। সে টের পায় তার সময় ফুরিয়ে আসছে দ্রুত। পাশে রাখা কাগজ-কলম টেনে নেয় সে। খুলনায় তার শাশুড়িই এখন তার শেষ ভরসা। কাঁপা হাতে সে লিখতে থাকে – ‘মা, আমি না থাকলে আপনার আদরের নাতিদের ওরা বিলিয়ে দেবে। আপনি যত তাড়াতাড়ি পারেন এসে আপনার নাতিদের নিয়ে যান...।’