পৃষ্ঠাসমূহ

২৫ জানু, ২০১৪

মধুকবি ও এতক্ষণে অরিন্দম

আজ মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মদিন। আমার ব্লগের নামটির জন্য আমি মধুকবির প্রতি কৃতজ্ঞ। তাঁর রচিত মেঘনাদবধ কাব্যের(১৮৬১) একটি পংক্তি থেকেই আমার নগণ্য ব্লগটির নামকরণ করেছিলাম এতক্ষণে অরিন্দম। বিষয়টি অনেকেই জ্ঞাত আছেন, আবার অনেকে বিভিন্ন সময় আমার কাছে জানতেও চেয়েছেন― সেই কারণে আজ এই বিশেষ দিনে ব্লগের নামটি নিয়ে কিছু কথা বলার ইচ্ছে হল।

ছোটবেলা থেকে বাংলা স্যারেরা আমার নাম শুনেই বলে উঠতেন, কোন অরিন্দম? এতক্ষণে অরিন্দম কহিলা বিষাদে? তাই মধুকবির সাথে আমার সখ্য একদম ছোটবেলার। বড় হয়েছি যশোরে তাই সাগরদাঁড়িতে মধুকবির বাড়ি, কপোতাক্ষ নদ এইসব জায়গায় ঘুরেছি প্রচুর। আমার জীবনের সাথে এইগুলা জড়িয়েই ছিল, আরও পড়তাম তাকে নিয়ে বই। রাগারাগি করে বিলেত চলে যাচ্ছেন, ধর্মান্তরিত হয়ে যাচ্ছেন, বিয়ে করছেন, ইংরেজীতে লিখছেন দ্য ক্যাপটিভ লেডি, পরে লেখা শুরু করলেন মাতৃভাষায়। বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর মত পয়সা নেই, তিনি মদ গিলতে গিলতে কাব্য লিখে চলেছেন, কবিকে আগলে রাখছেন স্ত্রী হেনরিয়েটা। বহুদিন পরে ফিরে এসেছিলেন, বাবা ঢুকতে দেননি বাড়িতে। মা তাঁকে ফিরাবার আগেই অভিমানী মধুকবি চলে গিয়েছিলেন বহুদূর। কবির এই জীবন আমার কাছে স্বপ্নের মত ছিল, ঐ বয়সেই মধুসূদনের মন্ত্রমুগ্ধ ছিলাম। শ্বেতপাথরে খোদাই করা কবিতাগুলো পড়ে অবাক হতাম বারবার। হয়ত বুঝে অথবা না বুঝে। মেঘনাদবধ কাব্যের ব্যাপারটা বোঝার পরে নিজের নাম নিয়ে গর্ব হত খুব। মেঘনাদ আমার ছোটবেলার নায়ক। তাই ব্লগটা বানানোর সময় এর থেকে ভাল নাম আর খুঁজে বের করতে পারিনি। সমস্ত প্রশংসা এক্ষেত্রে মধুকবির। মেঘনাদবধ কাব্যে কবি লিখেছিলেন―

"এতক্ষণে" ―অরিন্দম কহিলা বিষাদে
"জানিনু কেমনে আসি লক্ষণ পশিল
রক্ষঃপুরে! হায়, তাত, উচিত কি তব
একাজ, নিকষা সতী তোমার জননী,
সহোদর রক্ষশ্রেষ্ঠ? ―শূলী-শম্ভূনিভ
কুম্ভকর্ণ? ভ্রাতৃপুত্র বাসব বিজয়ী?
নিজগৃহপথ, তাত, দেখাও তস্করে?

কবির প্রতি আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা। শুভ জন্মদিন মধুকবি।।


অরিন্দম গুস্তাভো বিশ্বাস
২৫ জানুয়ারী ২০১৪
ঢাকা