পৃষ্ঠাসমূহ

২৮ মার্চ, ২০১৫

একুশ মার্চের রাত্রিতে

পাটুরিয়া ফেরীঘাট। গভীর রাত। ঘড়ির কাঁটা প্রায় দেড়টা ছুঁয়েছে। শাহ জালাল, শাহ পরাণ, শাহ আমানত অথবা শাহ 'কিছু একটা' নামের একটা ফেরীর উপরে আমি দাঁড়িয়ে আছি। আমার পেছনে ও পাশে সারি সারি বাসের ভিড়। সেই বাসগুলোর মাঝে সৃষ্ট সরু গলির ভেতর দিয়ে দারুণ দক্ষতায় ধূলো থেকে গা' বাঁচিয়ে লোকজন অবলীলায় যাতায়াত করে চলেছে। আমার জন্য ব্যপারটা অন্য সবার মত সহজ ছিল না। আমার কাঁধে ল্যাপটপের হোঁৎকা-মোটা ব্যাগটা আমাকে ওখান থেকে গলে যেতে দেয়নি। অতঃপর কিছুটা কসরৎ করে ব্যাগটাকে হাতে ঝুলিয়ে নিয়ে সেখান থেকে পার হতে হয়েছে। আপাতত ফেরীর পাশের দিকে লোহার ব্যারিকেডের ধারে আমি অবস্থান নিয়েছি। উচ্চস্বরে ফেরীর সাইরেন বাজছে— প...অঅঅঅঅ। এই শব্দটা কেমন একটা অদ্ভুত দুঃখমাখা অনুভূতি সঞ্চারিত করে হৃদয়ের ভেতর। আমি প্রতিবার খেয়াল করেছি এটা। কেউ যেন বিদায় নিয়ে চলে যাচ্ছে কারও কাছ থেকে। সত্যিই কি তাই? অথবা এমনও হতে পারে আমি নিজের জীবনের ঘটনাপ্রবাহের সাথে আশেপাশে শোনা শব্দগুলোকে মেলাতে চেষ্টা করছি নিজের অজান্তে। আমার জীবন যেন কোন সিনেমার ফিল্ম, মুভিওলায় বসে ভিজ্যুয়ালের জন্য খুঁজছি সুপ্রযোজ্য সুর। অথবা মনে পড়ে যায় 'শাটার আইল্যান্ড'-এর সেই সাইরেনের কথা। এখনও মনে পড়লে ভয় করে, কান দিয়ে প্রবেশ করে হৃদয়ের ভেতর গিয়ে যেন হাতুড়ি পিটতে থাকে সেই শব্দ।