জাপানী চলচ্চিত্র পরিচালক
আকিরা কুরোসাওয়া(১৯১০ - ১৯৯৮) এই চিঠিটি লিখেছিলেন সুইডিশ পরিচালক ইঙ্গমার বার্গম্যান-কে(১৯১৮
- ২০০৭), বার্গম্যানের ৭০তম জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে। সেই হিসেবে চিঠিটির তারিখ হয়
১৪ই জুলাই ১৯৮৮। চিঠিটি প্রকাশিত হয়েছিল একই সালে, 'চ্যাপলিন' ফিল্ম ম্যাগাজিনে। ছোট্ট চিঠিটি আমাকে মুগ্ধ করেছে, তাই অনুবাদ করে ফেললাম।
২৭ ডিসে, ২০১৩
৮ ডিসে, ২০১৩
জন লেনন স্মরণে কবিতাঃ সত্যপ্রলাপ
জন, কেমন আছ তুমি?
অনেক অভিমান আমাদের উপর
তাইনা?
তুমি কি জান,
ওনো তোমার জন্য এখনও কাঁদে
প্রতিরাতে?
তোমার শরীরে,
বুলেটের ক্ষত, রক্তমাখা চশমা
আমরাই অপরাধী।
২৫ নভে, ২০১৩
দায়মুক্তির কবিতাঃ লাশের মিছিলে
লাশের উপর
লাশ,
লাশের নীচে
লাশ।
নিষ্ফল আক্রোশ,
আর ভীষণ
অবিশ্বাস!
আগুনে পোড়া
লাশ,
থেৎলে যাওয়া
লাশ।
আমাদের ভন্ডামী,
আর বেঁচে
থাকার আঁশ!
১৩ নভে, ২০১৩
জনৈক মানুষী
বাতাসে ওড়ে এলোমেলো চুল,
কাশবনের শ্বেত-শুভ্র অন্ধকারে,
কুয়াশা ঢাকা শাড়ীর আঁচল।
ডাগর চোখ দু'খানি আনমনে চেয়ে থাকে,
মায়াময় ঝুলে থাকে নক্ষত্রের মতন,
নোনা গন্ধে আচ্ছন্ন হয়ে ধূসর আকাশ,
মাতাল সমীরণে ভাসে আশ্চর্য সুখ-বেদন।
৪ নভে, ২০১৩
ঋত্বিক ঘটকঃ জীবন, কর্ম ও দর্শন
ঠোঁটে পাতার বিড়ি আর হাতে
বাংলা মদের বোতল। মাথাভর্তি উদভ্রান্তের মত এলোমেলো চুল, ক্ষুরের স্পর্শাভাবে গালে
খোঁচা খোঁচা দাড়ি। পরনে ধুলিমলিন পাজামা-পাঞ্জাবীর সাথে কাঁধে একটা শান্তিনিকেতনী ঝোলা।
চোখে কালো ফ্রেমের চশমা, সে চোখে কৌতুক মেশানো ধারালো দৃষ্টি। 'তিনি কে' এই প্রশ্ন
কেউ করলে কোনরকম হেঁয়ালী না করেই সরাসরি জবাব দিয়ে দেবেন - 'আমি এক মাতাল। ভাঙ্গা বুদ্ধিজীবী,
ব্রোকেন ইন্টেলেকচুয়াল'। এই হল কিংবদন্তী চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের লেন্সের ভেতর দিয়ে
নিজেকে দেখার উপলব্ধি।
পুরো নাম ঋত্বিক কুমার ঘটক।
জন্মেছিলেন ঢাকায়, ১৯২৫ সালের ৪ নভেম্বর। বাবার নাম সুরেশ চন্দ্র ঘটক, মা ইন্দুবালা
দেবী। পরিবারের মধ্যে আগে থেকেই শিল্প-সাহিত্যের চর্চা ছিল। বাবা সুরেশ চন্দ্র ঘটক
একজন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হলেও কবিতা ও নাটক লিখতেন। খ্যাতিমান লেখক মণীশ ঘটক(ছদ্মনাম
'যুবনাশ্ব') ছিলেন ঋত্বিকের বড় ভাই। ঋত্বিক ঘটক ১৯৪৬ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে আই.এ এবং
১৯৪৮ সালে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে বি.এ. ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে
ইংরেজিতে এম.এ. কোর্স শেষ করলেও পরীক্ষাটা আর দেওয়া হয়ে ওঠেনি তাঁর। ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষ,
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং সর্বোপরি ১৯৪৭ এর ভারত ভাগের ফলে ঘটক পরিবার কলকাতায় চলে যেতে
বাধ্য হয়। নিজের জন্মভূমি ত্যাগ করে শরনার্থী হবার মর্মবেদনা ঋত্বিক কোনদিন ভুলতে পারেননি
এবং তাঁর জীবন-দর্শন নির্মাণে এই ঘটনা ছিল সবচেয়ে বড় প্রভাবক যা পরবর্তীকালে তার সৃষ্টির
মধ্যে বারংবার ফুটে ওঠে।
২ নভে, ২০১৩
স্মৃতি-বিস্মৃতির তাজউদ্দীন আহমদ
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
তাজউদ্দীন আহমদ। জন্মেছিলেন ঢাকার অদূরে
কাপাসিয়ার দরদরিয়া গ্রামে, ১৯২৫ সালের ২৩শে
জু্লাই। নানান ঘটনাপ্রবাহের মধ্য দিয়ে
যে মানুষটি
পরবর্তীকালে হয়ে উঠেছিলেন বাংলাদেশের যুদ্ধদিনের
কান্ডারী, এক নিঃসঙ্গ সারথী।
ছোট্টবেলাতেই এই মানুষটি
দেশপ্রেম আর
রাজনীতির দর্শন
পেয়েছিলেন ব্রিটিশ রাজবন্দীদের কাছ থেকে। মানবতাবাদী
এই মানুষটি
স্কুলের ছুটিতে
বাড়িতে ফিরেও
লেগে যেতেন
কলেরা রোগীদের
সেবা শুশ্রষা
করার কাজে। উন্নত
জীবনযাপনের স্বপ্নপূরণের জন্য লেখাপড়া করার
ইচ্ছা তাঁর
মধ্যে ছিলনা,
তাঁর স্বপ্ন
ছিল রাজনীতি
করার, যে
রাজনীতি হবে
মানুষের জন্য। তবু
অসাধারণ মেধার
সাহায্যে তিনি
কৃতিত্বের সাথে পেরিয়ে গিয়েছিলেন শিক্ষাজীবনের
প্রতিটি ধাপ। রাজনীতিতে
সক্রিয় হবার
কারণে শিক্ষাজীবনের
ধারাবাহিকতায় ছেদও পড়েছিল বারবার।
ধীরে ধীরে
এই প্রচারবিমুখ
মানুষটি নিজগুনে
হয়ে উঠেছিলেন
তৎকালীন আওয়ামী
লীগের এক
অপরিহার্য কর্মী, শেখ মুজিবুর রহমানের
একান্ত সহচর।
৩০ অক্টো, ২০১৩
Ritwik Ghatak: Life, Works & Philosophy ― (Part 4 of 4)
Ritwik joined the Pune Film and Television institute as a
visiting professor at the end of 1966 and later became a vice principal. He was
attached to two cinemas named 'Fear' and 'Rendezvous' during the tenure of his
teaching here. Ritwik placed his teaching life over his film career. He says,
'I feel, the few films that I made in my life, if kept in one side of weighing
balance and the teaching on the other, then the teaching would be heavier.
Because today my students are everywhere, Kashmir to Kerala, Madras to Assam.
The little contribution I could make for them was much important than making my
own cinema.'
২৯ অক্টো, ২০১৩
প্রিয়তমা তোমার জন্য
কত বছর গেল কেটে,
হাতে হাত
রেখে―
ভালবাসা
দিয়েছি জমা।
তোমায় নিয়ে
জলকন্যা,
স্বচ্ছ পানিতে
পা ডুবিয়ে,
চোখে চোখ
রেখে―
থেকে গেছি
দু'জনের দুজনা।
১৭ অক্টো, ২০১৩
Ritwik Ghatak: Life, Works & Philosophy ― (Part 3 of 4)
Ritwik used to say about the philosophy of cinema, 'Film-making
is not an esoteric thing to me. I consider film-making – to start with – a
personal thing. If a person does not have a vision of his own, he cannot create'.
The personal experience is evident in his cinemas, he wished to express in very
many ways his inner agony of becoming refugee as a result of partition. In own
words of Ritwik ,'I could neither accept the partition of Bengal in any ways―
Nor do I today. Whatever happened in history will not alter and I won’t venture
to do this impossible task. The cultural segregation caused by politics and
economics was a thing to which I never reconciled myself as I always thought in
terms of cultural integration'.
১৩ অক্টো, ২০১৩
Ritwik Ghatak: Life, Works & Philosophy ― (Part 2 of 4)
PART 1
Ritwik made three documentaries in 1955. The life journey of Oraon tribal community 'Oraon', the life of the tribal of Bihar 'Adivasiyon Ka Jeevan Srot' and the spectacular places of Bihar 'Bihar Ke Darshaniya Sthan'. He married Surma Devi after returning from Bihar. She was also a theatre worker and they came to know each other through theatre. After some days, Ritwik found a job at Filmistan Studio of Bombay with the help of Salil Chowdhury. To start with, Ritwik used to stay with Hrishikesh Mukherjee and wrote the screenplay of the cinema 'Musafir' under his direction. The best commercial success of Ritwik's life came from the screenplay of the cinema 'Madhumati' made by Bimal Roy in 1958. It was the first line cinema made with the concept of reincarnation. Later he wrote screenplays for some other films that includes 'Swaralipi'(1960), 'Kumari Mon'(1962), 'Dwiper Naam Tiarong'(1963), 'Rajkonna'(1965) and 'Hirer Projapoti'(1958). In spite of his business in writing essays and screenplays the constant pressure of writing screenplays for commercial style cinemas of Bombay gradually became unbearable for Ritwik. So he left the job of ensured income of Bombay and reverted to Calcutta.
Ritwik made three documentaries in 1955. The life journey of Oraon tribal community 'Oraon', the life of the tribal of Bihar 'Adivasiyon Ka Jeevan Srot' and the spectacular places of Bihar 'Bihar Ke Darshaniya Sthan'. He married Surma Devi after returning from Bihar. She was also a theatre worker and they came to know each other through theatre. After some days, Ritwik found a job at Filmistan Studio of Bombay with the help of Salil Chowdhury. To start with, Ritwik used to stay with Hrishikesh Mukherjee and wrote the screenplay of the cinema 'Musafir' under his direction. The best commercial success of Ritwik's life came from the screenplay of the cinema 'Madhumati' made by Bimal Roy in 1958. It was the first line cinema made with the concept of reincarnation. Later he wrote screenplays for some other films that includes 'Swaralipi'(1960), 'Kumari Mon'(1962), 'Dwiper Naam Tiarong'(1963), 'Rajkonna'(1965) and 'Hirer Projapoti'(1958). In spite of his business in writing essays and screenplays the constant pressure of writing screenplays for commercial style cinemas of Bombay gradually became unbearable for Ritwik. So he left the job of ensured income of Bombay and reverted to Calcutta.
৭ অক্টো, ২০১৩
Ritwik Ghatak: Life, Works & Philosophy ― (Part 1 of 4)
The pair of lips holding a bidi of leaf, a bottle of
local liquor in the hand. Head full of messy hair like a bewildered person, bristly
face due to lack of use of razor. Dressed with dirty paijama-panjabi with Shantiniketani
bag in the shoulder. A black framed spectacles with a sharp look in the eyes
blended with sarcasm. 'Who is he'- this question from anyone, will meet a
direct answer from him without any deception ― 'I am a drunkard. Broken
intellectual'. This is the self-perception of legendary film-maker Ritwik
Ghatak through his own lens.
Full name was Ritwik Kumar Ghatak. Was born in Dhaka, on
4th November 1925. Father's name was Suresh Chandra Ghatak, Mother was Indubala
Devi. There was an existing practice of culture and literature in the family.
His father Suresh Chandra Ghatak, despite being a district magistrate, used to
write poems and dramas. Renowned writer Manish Ghatak(Pen name 'Jubanashwa')
was Ritwik's elder brother. Ritwik Ghatak acquired I.A. from Rajshahi College
in 1946 and B.A. from Baharampur Krishna Nath College in 1948. Though he
completed his M.A. course in English from Calcutta University, for some reasons
he could not sit for the examination. Ghatak family was forced to repatriate to
Calcutta due to the famine of 1943, second world war and moreover the partition
of India in 1947. Ritwik could never forget the inner pain of being a refugee
leaving his motherland and it was the biggest catalyst of developing his
philosophy of life that was repeatedly evident in his later works.
১ অক্টো, ২০১৩
ঋত্বিক ঘটকের তথ্যচিত্র - ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ
একটা গল্প দিয়েই
শুরু করি। কোন
এক দেশে
দুইজন লোকের
মধ্যে খুব
প্রতিযোগিতা লেগে থাকত। এর
মধ্যে একজন
বহুদিন ধরে
গুরুর সেবা-যত্ন করে
জ্ঞান আহরণ
করার পর
অপরজন আর ঠিক
পেরে উঠছিল
না।
তখন সে
তপস্যা করতে
মনস্থ করল। অতঃপর
তাঁর তপস্যায়
প্রীত হয়ে
নেমে এলেন
এক দেবতা। লোকটি
বর চাইল
যে তার
জ্ঞান যেন
তার প্রতিযোগীর
সমান-সমান
হয়।
যথারীতি বর
পূর্ণ হল। এরপর
সে গেল
অপরজনের সাথে
লড়াই করতে। কিন্তু
তবুও নানান
কথার মারপ্যাঁচে
সে আর
পেরে ওঠে
না।
তখন রাগের
বশে দেবতাকে
স্মরণ করে
সে বলতে
লাগল, এ
আমায় কি
জ্ঞান দিলেন
গুরুদেব? আমি
তো ওকে
হারাতে পারছি
না।
সেই দেবতা
তখন হাজির
হয়ে উত্তর
দিলেন, তোমাদের
দু'জনের
জ্ঞান সমান
হতে পারে
কিন্তু অপরজনের
যে জ্ঞানসাধনা
আছে সেটা
তো তোমার
নেই।
তাই তোমার
পক্ষে ওকে
পরাজিত করা
সম্ভব নয়। এই
গল্পের মূল
প্রতিপাদ্য বিষয়টি হচ্ছে যে সাধনা
করে অর্জন
করা জ্ঞান
সর্বদাই শক্তিশালী।
১৩ সেপ, ২০১৩
Diary of Tajuddin Ahmad
Introduction:
Tajuddin Ahmed, 46.
Prime Minister, a lawyer who has been a chief organizer in the Awami League
since its founding in 1949. He is an expert in economics and is considered one
of the party's leading intellectuals.
Monday, Dec. 20,
1971. TIME Magazine
Bangladesh: Out of
War, a Nation Is Born
Handwriting of Tajuddin Ahmad |
― This is how the
TIME Magazine described Tajuddin Ahmad(1925 - 1975) who was the first Prime
Minister of Bangladesh and served the country during its liberation war in
1971. In his younger age he used to keep diaries in English, not because of any
political reason but to write down his daily works and personal things. He
regularly kept it from 1946 to 1956. Few of those diaries survived the
calamities of the war. The following is his two days entry from the diary of
1947-1948. This shows his thoughts and philosophy about his one-time political
rival Mr. M. K. Gandhi, after the Congressman was shot dead in Delhi. It has to
be remembered that when Tajuddin Ahmad is writing this, he is a Bengali Muslim
youth of 22 years and a full time political worker of Muslim League. Moreover,
Indian subcontinent has just got independence from
British imperialism.
৭ সেপ, ২০১৩
দ্বান্দ্বিক সংস্কৃতির টানাপোড়েনঃ দ্য নেমসেক
মানুষের মূল পরিচয়টা আসলে
কোথায়? একজন মানুষের আসল পরিচয় লুকিয়ে থাকে তাঁর বেড়ে ওঠা সংস্কৃতির শেকড়ে। এরপর সে
যেখানেই যাক না কেন এই শেকড় সে আর তুলে ফেলতে পারে না। স্বাভাবিকভাবেই পৃথিবীর বিভিন্ন
সংস্কৃতির মধ্যে রয়েছে পার্থক্য―
আচরণে, আবেগ-অনুভূতির প্রকাশে। একইভাবে আমাদের
উপমহাদেশীয় এবং পশ্চিমা সংস্কৃতি তথা জীবনাচারণের মধ্যে রয়েছে বিস্তর ফারাক। এই দুই
সংস্কৃতির সংস্পর্শে বেড়ে ওঠা দুইটি প্রজন্মের মধ্যে যে সংঘাত সময়ের সাথে অনিবার্য
হয়ে ওঠে সেটাকে উপজীব্য করেই পরিচালক মীরা নায়ার নির্মাণ করেছেন তাঁর ২০০৬ সালের চলচ্চিত্র
দ্য নেমসেক। মীরা নায়ারের ক্যামেরা এই
সংঘাতের একটি সৎ পর্যবেক্ষন করার চেষ্টা করেছে মাত্র, কোন সম্ভাব্য সমাধানে পৌঁছানোর
চেষ্টা এই সিনেমার মাধ্যমে করা হয়নি। সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে ঝুম্পা লাহিড়ীর একই নামের
উপন্যাস অবলম্বনে।
২ সেপ, ২০১৩
মিথলজিক্যাল মিথিলা
অফিস থেকে তড়িঘড়ি
করে বের
হয় রঞ্জন। তাড়াহুড়া
করতে গেলে
সমসময় তার
কিছু না
কিছু একটা
ভুল হয়। সেটা
সময়মত মনে
আসে না। মনে
আসে পরে। রঞ্জন
খুব খুঁতখুঁতে
টাইপের মানুষ। প্রতিটা
জিনিস মনের
মত না হলে তার শান্তি হয়
না।
আজকে আবার একটা বিশেষ দিন।
এইসব দিনেই
এমন ভুলগুলো
বেশী করে
হয়।
রঞ্জন অফিসের
সামনে দাঁড়িয়ে
ভাবতে থাকে। কলম,
মোবাইল, ওয়ালেট
সবকিছু পকেটেই
আছে।
তবুও রঞ্জনের
মনের ভেতরটা
খচখচ করে। হঠাৎ
তার মনে
পড়ে যায়, আইডি
কার্ড! সেটা
সে ফেলে
এসেছে টেবিলের
উপর।
উফফ্! নিজের
উপরে নিজেরই
রাগ হয়
রঞ্জনের।
এখন এই
আইডি কার্ড
আনতে গিয়ে
বসের সাথে
দেখা হয়ে
গেলে পড়তে
হবে আরেক
ঝামেলায়।
তবু তাকে
যেতেই হবে,
আজকের দিনে
এমন ভুল
করা চলবে
না।
গুটিগুটি পায়ে
রঞ্জন আবার
অফিসে ঢোকে। জোর
পায়ে হেঁটে
বসের রুমটা
পার হয়ে
যায়।
টেবিলের উপর
থেকে কার্ডটা
ছোঁ মেরে
তুলে নিয়ে
প্রায় দৌড়ে
বেরিয়ে আসে
বাইরে।
১৩ আগ, ২০১৩
আমার চোখে 'রানওয়ে'
আমি ঢাকায় যে বাড়িতে থাকি তার আগে ও পরে দুইপাশেই বস্তি আছে। পরের বস্তির ওপাশে একটা দেয়ালের পরই ঢাকা এয়ারপোর্টের রানওয়ে। আমি কাজের ফাঁকে বারান্দায় অথবা জানালার কাছে বসে সেই বস্তির মানুষদের মুগ্ধ হয়ে দেখি। যাদের নিয়ে আমরা সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা প্রতিনিয়ত গলাবাজি করি সেই ‘নিম্নবিত্ত’ বিশেষণে বিশেষায়িত শ্রেনীটির জীবনযাত্রা আমি মফস্বলে বড় হয়েও এত কাছ থেকে দেখিনি কোনদিন, যা দেখতে পেয়েছি এই ইট-পাথরের ঢাকা শহরে এসে। সারাদিন বিমানের শব্দ, উঠছে-নামছে অবিরাম। ছোট বাচ্চারা বিমান দেখে দেয়ালের উপর উঠে হাততালি দেয়। বাড়ির মহিলারা কেউ ঝাঁড়ু বাঁধে, কেউবা পালে গরু। পুরুষদের কেউ রিক্সা চালায়, কারও আছে ছোটখাট ব্যবসা। মাঝে মাঝে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তুমুল ঝগড়া বাঁধে, সেটা আবার মিটমাট করে দেন সেখানকার প্রবীণেরা। একটু বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার কারনে তাদের আর দুঃখের সীমা থাকে না, জলের মাঝেই বাস করতে হয় তখন। কিছু কিছু দিন দেখি ওপাশের বস্তির একটি ছেলে এপাশের বস্তির সামনে দাঁড়িয়ে অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে এদিক সেদিক তাকায়, কখনও বা অপ্রয়োজনে মনোযোগ দিয়ে মোবাইল টিপতে থাকে। একটু পরেই ব্যাপারটা পরিষ্কার হয় যখন সলজ্জ ভঙ্গিতে একটি মেয়ে বের হয়ে এসে ছেলেটির সামনে দাঁড়ায়। বুঝতে পারি মন দেয়া–নেয়া চলছে তাদের। এদের জীবন দেখতে দেখতে আমাদের নিজেদের জীবনের অতি জটিল সব রসায়ন অতীব সহজ হয়ে আমার কাছে ধরা দেয়। আমি নস্টালজিক হয়ে ফিরে যাই আমার স্কুল জীবনের বাংলা বইয়ের পাতায়। জহির রায়হানের উপন্যাস ‘হাজার বছর ধরে’র নানান চরিত্রের ছাঁচে কি অবলীলায় বসে যায় আমার বাড়ির পাশের মানুষগুলো! কিন্তু এবার মনে হচ্ছে শুধু এই উপন্যাসটি নিয়ে আর ভাবতে হবে না, ভাবার জন্য আমি পেয়ে গেছি একটি নতুন মাত্রা। এবার অবশ্য আর উপন্যাস নয়, নতুন মাত্রাটি যোগ করল নির্মাতা তারেক মাসুদের সাম্প্রতিক চলচ্চিত্রঃ ‘রানওয়ে’।
২৪ জুল, ২০১৩
আম্মুর জন্মদিন ২০১৩
তোমাকে নিয়ে কিছু বলতে গেলেই
অনেক কিছু বলতে ইচ্ছা করে। কিন্তু আমি হচ্ছি দরিদ্র জেলে আর বড়ই ছোট্ট আমার নৌকা আর
জাল। সাগরসম তোমাকে কাগজবন্ধী করার ক্ষমতা আমার ক্ষুদ্র কলমের নেই। তাই ছোট্ট জাল ফেলে
তুলে নিয়ে আসি গুটিকতক মাছ। সেই মাছের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে আমার সাগরকে ছোঁয়ার স্বপ্ন।
আজকে তোমাকে এমন একটা কথা
বলি যেটা আসলে কখনও এইভাবে বলা হয়নি।
২৩ জুল, ২০১৩
বঙ্গবন্ধু, তাজউদ্দীন, সমসাময়িক বাংলাদেশ এবং আমি
Steve Jobs এর মত প্রথমেই বলতে চাই – Truth be told, আমি বাংলাদেশের ইতিহাস এবং রাজনীতি সম্পর্কে খুবই
কম জানি। ইতিহাস সম্পর্কে কম জানি এজন্য যে আমি এমন একটি সময়ে বেড়ে উঠেছি যখন
নানান কারণে বাংলাদেশের ইতিহাস নিয়ে এমন একটা টানাহ্যাঁচড়া টাইপ এর ব্যাপার হয়েছে
যে কোনটা আসল আর কোনটা নকল এ বিষয় নিয়ে ওই অল্প বয়সেই সন্ধিহান ছিলাম। বাংলাদেশের
ইতিহাস সম্পর্কে সেই ধোঁয়াশা ভাব আজও পুরোপুরি যে গেছে তা জোর দিয়ে বলতে পারি না।
আর বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পর্কে তথা বিভিন্ন সরকারি কার্যক্রম ও দেশের সামগ্রিক
উন্নতির উপর আমার কোনদিনই আস্থা ছিল না। আর আশে-পাশে সবাই দেখতাম সেই ধুঁকে ধুঁকে
চলা জীবনটাকে নিয়তি বলে মেনে নিয়ে সেখান থেকেই ফায়দা লুটার কাজে ব্যাস্ত। তাই যখন
কলেজ এ পড়তাম তখন দেশের কথা কোন আলোচনায় উঠলে আমার একটা fixed dialogue ছিল। আমি বলতাম ‘যে দেশের মানুষ তাদের জাতির জনক কে হত্যা করে, যে
দেশে একটি বিশেষ শ্রেনীর মানুষ সে দেশটির জন্মের বিরোধিতা করেও সে দেশের শাসন
ক্ষমতা প্রাপ্ত হয় এবং যে দেশের মানুষ কাশির ওষুধ খেয়ে নেশা করে – সে দেশের কোনদিন উন্নতি হতে
পারে না।
১৯ জুল, ২০১৩
আমারে তুমি অশেষ করেছ
‘আমি ঘরে ফিরে
এলাম।
গ্লাস ভর্তি
পেপসি, সাথে
কিছু বরফও
ভাসছে।
দুধকে পেপসি
বানানোর মন্ত্র
তাহলে সত্যি
আছে? আমি
দৌড়ে বাইরে
বের হলাম। দারোয়ান
শুধু বলতে
পারল একটা
ছেলেকে সে
শিষ দিতে
দিতে রাস্তা
দিয়ে চলে
যেতে দেখেছে…’
এই লাইনগুলি কতদিন
আগে পড়া?
বারো বছরের
বেশী তো
হবেই।
কিন্তু মনে
হয় যেন
এই সেদিন
পড়েছি।
আমার মস্তিস্ক
এতদিন ধরে
এই লাইনগুলি
সযত্নে সংরক্ষণ
করে চলেছে। কিন্তু
কেন? এই
লাইনগুলি আমাকে
আমার ছেলেবেলায়
ফিরিয়ে নিয়ে
যেতে পারে
এই কি
তার কারণ?
এই লাইনগুলা
তো শুধু
গল্পের লাইন
নয়, এর
সাথে জড়িয়ে
আছে ছোটবেলার
ফেলে আসা
মফস্বল, বাড়ির
ছাদ, স্কুল,
আম্মুর হাতের
মার, পেছনের
পুকুরে পড়ে
যাওয়া টেনিস
বল…আরও
কত কি!
আর হ্যাঁ,
এবং অবশ্যই
একটি ধূসর
মলাটের গল্পের
বই।
বইটির নাম
– ‘মজার ভূত’। লেখক
– ‘হুমায়ূন আহমেদ’। আমাদের অতিপ্রিয়
হুমায়ূন স্যার। যিনি
ভূতের মত
ভয়ঙ্কর একটা
জিনিসের মধ্যেও
মজা ছড়িয়ে
দিয়ে আমার
ছেলেবেলাকে কল্পনার রঙে রঙিন করে
তুলেছিলেন।
৭ জুল, ২০১৩
আমার প্রথম মুভি রিভিউঃ লেমন ট্রি
আমার এক বন্ধু আছে, ফিলিস্তিনি। ওর নাম হল হোমাম। খুব
ভাল ছেলে, সবাইকে সন্মান দিয়ে ‘আপনি’ করে কথা বলে। ওর সাথে পরিচয় এআইইউবি’তে এসে, এই
বছরের শুরুতে। কয়েক মাস আগে ও কি একটা কাজে খুলনায় গিয়েছিল, তখন আমিও ছিলাম
খুলনাতে। চলে আসার দিন ও আমার সাথেই ছিল প্রায় সারাদিন, আমার বাড়ীতেও গিয়েছিল।
অনেক বিষয়ে কথা হল সেদিন, ভার্সিটিতে এত কথা বলা হয়নি কখনও।
২৭ জুন, ২০১৩
কিংবদন্তির বিদায়!
'এ্যাই তোর রোল
নম্বর ৩১
ছিলনা?'
আমি ভ্যাবাচেকা খেয়ে
যাই।
আমতা আমতা
করতে থাকি। স্কুল
ছেড়েছি প্রায়
৬-৭ বছর
আগে।
রোল নম্বর কত ছিল সেটা তো
মনে নাই।
'ক্লাশ নাইনে ৩১ ছিল তো নাকি?',
স্যার আবারও জানতে চান।
এইবার আমার মনে পড়ে যায়। সেন্ট
জোসেফস্ স্কুলে আমি যখন ভর্তি হই তখন ৩১ নম্বর রোলটা ফাঁকা ছিল তাই আমাকে সেটাই দেওয়া
হয়েছিল। আমি স্যারের অসাধারণ স্মৃতিশক্তি দেখে অবাক হই।
এই ঘটনা প্রবাহের শুরু হয়েছিল
বহুবছর আগে...
১৪ জুন, ২০১৩
চে’ গুয়েভারাঃ একটি বিপ্লবী জীবন
আর্নেস্তো চে’
গুয়েভারা (স্প্যানিশ উচ্চারণে ‘আর্নেস্তো
চে’ গেভারা’) ১৯২৮ সালের ১৪ই জুন আর্জেন্টিনার
রোসারিওতে জন্মগ্রহন করেন। তার বাবার নাম আর্নেস্তো গুয়েভারা লিঞ্চ এবং মা’র নাম সেলিয়া দে লা সারনা।
১৯৪৮ সালে তিনি ইউনিভার্সিটি
অফ বুয়েনস্ আয়ার্স এ চিকিৎসাশাস্ত্রে পড়াশুনা শুরু করেন। কিন্তু তার ছিল এ
পৃথিবীকে জানার ইচ্ছা। তার প্রথম অভিযান ছিল ১৯৫০ সালে ৪৫০০ কিলোমিটার (২৮০০ মাইল)
এর একটি যাত্রা। একটি ছোট মোটর লাগানো সাইকেলে করে তিনি একাই উত্তর আমেরিকার
গ্রাম্য প্রদেশগুলো ভ্রমণ করেন। ১৯৫১ সালে নয়মাস ব্যাপী দ্বিতীয় অভিযানে তিনি পাড়ি
দেন ৮০০০ কিলোমিটার (৫০০০ মাইল)। এই অভিযানে তার সঙ্গী ছিলেন তার বন্ধু আলবার্তো
গ্রানাদো। তারা দু’জন মোটরসাইকেলে করে
পাড়ি দেন আর্জেন্টিনা, চিলি, পেরু, ইকুয়েডর, কলম্বিয়া, ভেনেজুয়েলা, পানামা এবং
মায়ামি’র ভেতর দিয়ে সাউথ
আমেরিকার প্রায় সবটুকু। এই অভিযানের কাহিনীই বিখ্যাত ‘মোটরসাইকেল ডায়েরি’
নামে পরিচিত।
৭ জুন, ২০১৩
আরাধ্য আঁধারে
একদিন সত্যি চলে
যাব,
এক প্রচন্ড ঝড়ের রাতে,
হারিয়ে যাব হঠাৎ
কোন ধবল বজ্রালোকে।
দমকা বাতাস পেরিয়ে
কোন আপন ঘরের সন্ধানে,
ঝিরিঝিরি বাতাসে যেখানে
দোল খাবে অলীক প্রজাপতি।
দু'পায়ে কাদামাটি লাগিয়ে
হেঁটে যাব বহুদূর পথ,
আকাশের প্রান্তে জমে থাকা
সোনারোদের প্রলোভনে।
৩ জুন, ২০১৩
বস্ত্রবালিকারা
তুমি আমাদের কষ্টের
কথা জানতে
চাও?
তুমি কি জান কষ্ট কাকে বলে?
কষ্টের রঙ কি জান তুমি?
একবুক স্বপ্ন নিয়ে জীবনে ঠকে
যেতে যেতে,
জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়গুলো বেচে
ফেলতে,
এ কেমন কষ্ট তা কি তুমি বুঝবে
কোনদিন?
জানতে চাও আমরা কেমন আছি?
ধুঁকে ধুঁকে বেঁচে থাকার মানে
কি তুমি বুঝবে?
গাড়ি আর হাইরাইজের শহরে বসে,
গ্রামে ফেলে আসা স্মৃতির কাতরতা,
আমার আশায় তাঁদের তাকিয়ে থাকাটা,
তুমি কি অনুভব করতে পারবে?
১৭ মে, ২০১৩
প্রেম কী!
বিশ্বসাহিত্যের
ইতিহাসে ‘প্রেম’ই বোধকরি সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। এমনকি
যেসব সাহিত্যিকেরা কোনদিন প্রেম নিয়ে কিছু লেখেননি, তারাও সুযোগ বুঝে প্রেম
সম্পর্কিত দু’একটা মন্তব্য করতে
পিছপা নন। জর্জ বার্নার্ড শ ছিলেন ঠোঁটকাটা ধরণের মানুষ। তিনি তো সরাসরি বলেই দিলেনঃ
‘প্রেম হচ্ছে সিগারেটের মত, যার শুরু
আগুন দিয়ে আর শেষ পরিণতি ছাইতে’।
আমাদের রবিবাবু আবার প্রেমের জন্য সবকিছু করতেই রাজী ছিলেন। তিনি গাইলেনঃ ‘চরণে ধরিয়া তব কহিব প্রকাশি, গোপনে
তোমারে, সখা,
কত ভালোবাসি’। অবশ্য, এসব বড় বড় মনিষীদের কথা বোঝা বড়ই দুষ্কর, এনাদের কথার
মাঝে অন্তর্নিহিত অর্থ মাঝে মাঝে কিঞ্চিত বিপরীতার্থক হওয়াও বিচিত্র নয়।
১৩ মে, ২০১৩
ইতস্তত কিছু কথকতা
সামনে ধূমায়িত কফির
কাপ।
বাইরে অঝোর বৃষ্টি,
ভেতরে
বিস্মৃতপ্রায় স্মৃতির
বাতাস,
দু’জনের মনে, স্কুল
জীবনের ঝড়ো হাওয়া।
মুখোমুখি একজোড়া
মানব-মানবী,
সামনে ধূমায়িত কফির
কাপ।
কোন এক ক্ষণিকের
রাস্তায়,
মিলেছিল তাদের মনের বাঁক, তারপর
কেটে গেছে দিন,
অনেকগুলো,
অর্থহীন কিছু নিথর
বছরের ফাঁদে।
২ মে, ২০১৩
প্রসঙ্গঃ সত্যজিৎ
সাবজেকটিভ ক্যামেরায় মাটির
মাইটের ভেতর
থেকে দূর্গার
বিড়াল বের
করা, অথবা
দোলনায় দুলতে
থাকা উচ্ছল
চারুলতার POV শট। এক ট্রলি
শটে বিরাট
বিয়ের অনুষ্ঠান
অথবা পালকির
সাথে চলতে
শুরু করা
ট্রলির ঘুমন্ত
অপুতে এসে
থেমে যাওয়া। অথবা...
অথবা...
গুরু, তুমি যা
করে দেখিয়েছো,
সেটা মুখে
বলতে গেলেও
হাজারটা মুখের
দরকার হবে। তাই
সেই চেষ্টা
আর করলাম
না।
কুরোসাওয়া'র কথাটাই আরেকবার বলে
যাইঃ সত্যজিৎ
রায়ের সিনেমা
যে দেখেনি,
সে পৃথিবীতে
বাস করেও
চাঁদ আর
সূর্য দেখেনি।
১৯৯২ সালে সত্যজিতের অনারারি
অস্কারের উদ্ধৃতিতে লেখা হয়েছিল, 'চলচ্চিত্র নির্মাণে তাঁর বিরল প্রতিভা এবং গভীর মানবিক
দৃষ্টিভঙ্গীর স্বীকৃতিস্বরূপ, যেটা সারা বিশ্বের চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং দর্শকদের স্থায়ীভাবে
প্রভাবিত করেছে।'
আজ (২রা মে
২০১৩) সত্যজিৎ
রায়ের জন্মদিন। তাঁর
সম্পর্কে বিভিন্ন
বিখ্যাত ব্যক্তিদের
অনুভূতি অনুবাদ
করে দিলাম।
শুভ জন্মদিন গুরু,
তুমি ছিলে
বলেই আমরা
আছি।
১৭ এপ্রি, ২০১৩
এখনও
এখনও রৌদ্রতপ্ত কোন
বিষন্ন দুপুরে,
সঙ্গীকে খুঁজে যায়
কোন একেলা
ঘুঘু।
এখনও নিশ্চুপ রাতের
নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে,
হুইসেল দিয়ে যায়
এক ব্যথিত
ট্রেন ইঞ্জিন।
এখনও হেঁটে চলা
মানুষের সমুদ্রে,
হঠাৎ উঁকি দেয়
কোন পরিচিত
মুখ।
এখনও মরা নদীর
বিস্মৃতপ্রায় জলের রেখা,
চিকচিক করে ওঠে
প্রথম সূর্যের
আলোকে।
১৬ এপ্রি, ২০১৩
চার্লিস স্পীচ - দ্যা গ্রেট ডিক্টেটর
চার্লি চ্যাপলিনের নাম শুনলেই কেউ কেউ ফিক করে হেসে পড়ে, কেউ গম্ভীর হয়ে যায়। হাসির মধ্যে দিয়ে বাস্তব জীবনের কি অসাধারণ চিত্রায়ন করে গেছেন ভদ্রলোক। কেউ হাসিটা দেখে, কেউ বাস্তবটা। সব বড় মাপের মানুষের মধ্যে আমি দর্শন খুঁজি। আমার ধারণা একটা মানুষ তখনই বড় কিছু হয় যখন তাঁর একটি পরিষ্কার দর্শন থাকে। সেটার প্রকাশমাধ্যম হতে পারে সাহিত্য, হতে পারে সেলুলয়েড, হতে পারে অন্য যে কোন কিছু। যে মানুষটা বলতে পারে Nothing is permanent in this wicked world, not even our troubles, তাঁর দর্শন সম্পর্কে কোন সন্দেহ থাকার কথা নয়। আজ(১৬ই এপ্রিল ২০১৩) চ্যাপলিনের জন্মদিন। তাই চ্যাপলিনকে নিয়ে কিছু লেখার ইচ্ছা হল। সেই চিন্তা থেকেই চ্যাপলিনের ১৯৪০ সালের চলচ্চিত্র দ্যা গ্রেট ডিক্টেটর এর শেষাংশের ভাষণটিকে অনুবাদ করে ফেললাম। অনুবাদক হিসেবে আমি যথেষ্ট ভাল না হওয়ায় সাথে ইংরেজীটাও দিয়ে দিলাম। অতি আগ্রহীদের জন্য দিলাম ভিডিওটি। শুভ জন্মদিন চার্লস!
১ এপ্রি, ২০১৩
স্বপ্নবাজ মানুষেরা
এই পৃথিবীটা স্বপ্ন
দেখা মানুষের
জন্য খুব
কঠিন জায়গা। সারাটা
জীবন এই
স্বপ্ন দেখার
অপরাধের কারণে
এদের শাস্তি
পেয়ে যেতে
হয়।
অনেক সময়
খুন হয়ে
যেতে হয়। প্রাচীন
গ্রীসে হাইপ্যাশিয়া
নামের একজন
মহিলা দার্শনিক
ছিলেন, অনেক
সূত্রমতে তাঁকে
পাথর ছুঁড়ে
হত্যা করা
হয়েছিল।
জীবনকালে গ্যালিলিও, কোপারনিকাস এদেরও অনেক নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছে, এখন অবশ্য
আমরা রাস্তার
মোড়ে ভাষ্কর্য
বানিয়ে তাঁদের
অবদানের জন্য
তাঁদের সন্মান
করি।
মাত্র কয়েকশো
বছর আগেই
ইটালিতে একজন
ছিলেন, মৃত্যুদন্ডের
আগে বলেছিলেন,
Perchance you who pronounce my sentence are in greater fear than I who receive
it, নাম তাঁর
জর্দানো ব্রুনো। এই
সূত্রে আরেকজনের
কথা মনে
পড়ল, তাঁর
নাম অগাস্ট
স্পাইস, আমরা
যে মে
ডে পালন
করি সেই
ইস্যুতেই শাস্তিপ্রাপ্ত
ছিলেন তিনি। মৃত্যুর
পূর্বে বলেছিলেন,
The day will come when our silence will be more powerful than the voices you
strangle today. এক মানবতাবাদী ছিলেন,
যিনি মানুষের
সমতাকে প্রতিষ্ঠা
করতে চেয়েছিলেন
সারা পৃথিবীতে। নিজের
উজ্জল ভবিষ্যত
ছুঁড়ে ফেলে
দিয়ে এসে
জীবন দিয়েছিলেন
সাম্রাজ্যবাদীদের গুলিতে।
তিনি কমোন্দান্তে
চে গুয়েভারা।
২৭ মার্চ, ২০১৩
অনিকেত প্রান্তরে একটি অন্যসময়ের অনুভূতি
এরশাদ ভাই আর্টসেল ছেড়ে দিচ্ছেন এই খবরটা এসেছিল গতবছরের মে মাসে। তখনই বুঝতে পেরেছিলাম যে আর্টসেল আর সেই আগের আর্টসেল থাকছে না। প্রায় এক বছর পর ফেসবুকে অন্য ব্যান্ড মেম্বারদের অফিশিয়াল ঘোষণার ভিডিওটির মাধ্যমে জানা গেল আর্টসেল ব্যান্ড ভেঙ্গে যাচ্ছে। আমি কলেজ লাইফ থেকে আর্টসেল শুনতে শুনতে বড় হয়েছি, তাই এই ব্যাপারটা মেনে নেওয়া আমার জন্য বেশ কষ্টকর। এরশাদ ভাইয়ের আর্টসেল ছেড়ে দেবার খবরটা পাবার পর আর্টসেলকে নিয়ে এই লেখাটি লিখেছিলাম। এরশাদ ভাইকে নিয়ে লিখলেও এটা আসলে আমার জীবনে আর্টসেলের গল্প। আর্টসেল ভেঙ্গে যাওয়ার খবরটা পাওয়ার পর এই লেখাটার কথা আবার মনে পড়ে গেল। কিছু ফেলে আসা স্মৃতি মানুষকে চিরকাল আবেগাপ্লুত করে, আমার জীবনে আর্টসেল তেমনি একটা সুখস্মৃতি। RIP আর্টসেল!
১৭ মার্চ, ২০১৩
সাংস্কৃতিক যুদ্ধক্ষেত্র ও শাহবাগ আন্দোলন
রাষ্ট্র পরিচালনার
ক্ষেত্রে বাঙ্গালির দূর্বলতার কারণ
হিসেবে অনেকে
মনে করেন
যে বাঙ্গালি জাতি চিরদিন শুধু শোষিত
হওয়ার ফলে
তারা শাসন
করতে শেখেনি। সেই পাল, সেন, মোঘল থেকে আরম্ভ
করে ব্রিটিশ, পাকিস্তান আমল
পর্যন্ত বাঙ্গালি জাতি শুধু
বহিরাগতদের দ্বারা শাসিত হয়ে
গেছে অবিরাম। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে
তাজউদ্দীন আহমদ
বলেছিলেন - আমরা আমাদের কর্মীদেরকে আন্দোলন করা
শিখিয়েছি, দেশ গড়ার কাজ
কিভাবে করতে
হবে তা
শেখাইনি। তবে গোটা ব্যাপারটির উপর যদি
বিপরীত দিক
থেকে আলোকপাত করা হয়
তাহলে দেখা
যাবে যে
উপর্যুপরি শোষণের ফলে বাঙ্গালিমাত্রই জানে কিভাবে আন্দোলন করতে হয়। আন্দোলন করা বাঙ্গালিকে শিখতে
হয় না, আন্দোলন মিশে
আছে বাঙ্গালির রক্তে। এর প্রমাণ বাঙ্গালি দিয়েছে বারবার, বহুবার। বাঙ্গালির
এই আন্দোলন পরিপূর্ণতা পায়
১৯৭১ সালের
মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ নামের স্বাধীন ভূখন্ডের জন্মের মাধ্যমে।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)