পাটুরিয়া ফেরীঘাট। গভীর রাত। ঘড়ির কাঁটা প্রায় দেড়টা ছুঁয়েছে। শাহ জালাল, শাহ পরাণ, শাহ আমানত অথবা শাহ 'কিছু একটা' নামের একটা ফেরীর উপরে আমি দাঁড়িয়ে আছি। আমার পেছনে ও পাশে সারি সারি বাসের ভিড়। সেই বাসগুলোর মাঝে সৃষ্ট সরু গলির ভেতর দিয়ে দারুণ দক্ষতায় ধূলো থেকে গা' বাঁচিয়ে লোকজন অবলীলায় যাতায়াত করে চলেছে। আমার জন্য ব্যপারটা অন্য সবার মত সহজ ছিল না। আমার কাঁধে ল্যাপটপের হোঁৎকা-মোটা ব্যাগটা আমাকে ওখান থেকে গলে যেতে দেয়নি। অতঃপর কিছুটা কসরৎ করে ব্যাগটাকে হাতে ঝুলিয়ে নিয়ে সেখান থেকে পার হতে হয়েছে। আপাতত ফেরীর পাশের দিকে লোহার ব্যারিকেডের ধারে আমি অবস্থান নিয়েছি। উচ্চস্বরে ফেরীর সাইরেন বাজছে— প...অঅঅঅঅ। এই শব্দটা কেমন একটা অদ্ভুত দুঃখমাখা অনুভূতি সঞ্চারিত করে হৃদয়ের ভেতর। আমি প্রতিবার খেয়াল করেছি এটা। কেউ যেন বিদায় নিয়ে চলে যাচ্ছে কারও কাছ থেকে। সত্যিই কি তাই? অথবা এমনও হতে পারে আমি নিজের জীবনের ঘটনাপ্রবাহের সাথে আশেপাশে শোনা শব্দগুলোকে মেলাতে চেষ্টা করছি নিজের অজান্তে। আমার জীবন যেন কোন সিনেমার ফিল্ম, মুভিওলায় বসে ভিজ্যুয়ালের জন্য খুঁজছি সুপ্রযোজ্য সুর। অথবা মনে পড়ে যায় 'শাটার আইল্যান্ড'-এর সেই সাইরেনের কথা। এখনও মনে পড়লে ভয় করে, কান দিয়ে প্রবেশ করে হৃদয়ের ভেতর গিয়ে যেন হাতুড়ি পিটতে থাকে সেই শব্দ।
২৮ মার্চ, ২০১৫
১৭ ফেব, ২০১৫
বরফসন্ধ্যায় অরণ্যের ভেতর — রবার্ট ফ্রস্ট
নিবাস তাঁর ঐ দূর গ্রামের ধারে,
জানবে না সে থমকে দাঁড়িয়ে দেখছি আমি—
স্নিগ্ধ বনভূমি ঢেকে যাচ্ছে ধবল তুষারে।
ভাবছে ঘোড়া এখানে থামছি কেন,
আশেপাশে নেই তো কোন খামারের আশ্রয়,
বিস্তৃত অরণ্যানী আর জমাট হ্রদের ধারে,
এই শীতল সময়ের অন্ধকারাচ্ছন্ন সন্ধ্যায়।
২৯ জানু, ২০১৫
ক্ষুধার্ত থেকো, বোকা থেকো
The people who are crazy
enough to think they can change the world are the ones who do.
— Apple's 'Think
Different' commercial, 1997
পৃথিবীকে পরিবর্তন করে দেবে এমন উদ্ভট চিন্তা করা উন্মাদেরাই শুধুমাত্র সেটা করতে পারে।
২৭ ডিসে, ২০১৪
অমলেন্দু কবি হতে চেয়েছিল
সেদিন প্রবল বর্ষণে চারিদিক অন্ধকার। আষাঢ় যেন পূর্ণোদ্যমে নেমে এসেছিল আকাশ ফুঁড়ে। হঠাৎ বৃষ্টির গন্ধে মাতাল পরিবেশ। বাইরে মানুষপাখিরা দিশেহারা। ওপাশের নারিকেল গাছগুলো যেন তীব্র বাতাসে মাটি ছুঁতে চাইছিল। শক্তিশালী বিজলি চমকে সারা আকাশ ভয়ানক সাদা আলোয় আলোকিত হয়ে যাবার পরমুহূর্তেই গুড়গুড় শব্দে কোন দানব যেন প্রকৃতিকে ভেঙে ফেলছিল প্রচণ্ড আক্রোশে। বাড়িতে সেদিন ছিল না কেউ। পরিবার গেছে সপ্তাহখানেকের জন্য অন্য একটি শহরে বিয়েতে যোগ দিতে। অফিসের ব্যস্ততায় থেকে গেছি আমি। কাজের মানুষগুলো সব যে যার মত আরাম করে ঝিমুচ্ছে এই বৃষ্টিস্নাত দুপুরে। এই দূর্যোগের মধ্যে কলিংবেলের আওয়াজে প্রথমে কিছুটা বিরক্তই হয়েছিলাম। দরজা খুলতেই পিয়ন বাড়িয়ে দিল একটি পার্সেল, তার সাথে সাঁটা একটি সস্তা খাম। ধন্যবাদ দিয়ে সেগুলো নিয়ে এলাম। পার্সেলটা রেখে খামটাই হাতে তুলে নিলাম প্রথমে। অতঃপর সেই খাম থেকেই বেরুল সংক্ষিপ্ত চিঠিটি। সংক্ষিপ্ত হলেও মূল সংবাদ তাতে পরিষ্কার।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)